রবীন্দ্রনাথের মানবতাবাদী দর্শনের মূল উৎসমূহ
রবীন্দ্রনাথের দর্শনকে মূলত মানবতাবাদী দর্শনরূপে উল্লেখ করা হয়। কারণ, রবীন্দ্রনাথ প্রদত্ত দর্শনে মানবতাবাদের বিষয়টিই দারুণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর মতে এই মানবতাবাদের বিষয়টি বিভিন্ন উৎস থেকে হাজির হয়েছে। মানবতাবাদী দর্শনের মূল উৎসগুলি এখানে উল্লেখ ও ব্যাখ্যা করা হল-
মানবতাবাদী দর্শনের মূল উৎস হিসেবে অদ্বৈত বেদান্ত:
মানবতাবাদের মূল কথাই হল জীবরূপে সকল মানুষের ওপরই গুরুত্ব দেওয়া, সকল মানুষকেই ভালবাসা। মানুষের সামগ্রিক মঙ্গল চিন্তা তাই মানবতাবাদ থেকেই নিঃসৃত। রবীন্দ্রনাথ অদ্বৈত বেদান্তের ভাবধারায় এক ও অদ্বিতীয় ব্রন্থের প্রকাশ হিসেবে মানুষের ওপরই সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। মানুষের অস্তিত্ব ও মর্যাদা তাই তাঁর কাছে সবার ঊর্ধ্বে। অদ্বৈত বেদান্তের মূলকথাই হল-জীব ব্রহ্মস্বরূপ। সেকারণেই তিনি যেখানেই মানুষ ও মনুষ্যত্বের অবমাননা দেখেছেন, সেখানেই তিনি প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন।
মানবতাবাদী দর্শনের উৎসে ধর্মীয় ভিত্তি:
মানবতাবাদী দর্শনের উৎসরূপে মানুষের জীবভাব ও বিশ্বভাব:
মানবতাবাদের উৎসে শ্রেষ্ঠ মানব চেতনা: রবীন্দ্রনাথের মতে, মানুষই হল শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের চেতনাই তাই সর্বশ্রেষ্ঠ চেতনারূপে গণ্য। এরূপ চেতনাই মানুষকে পরিপূর্ণভাবে মেলে ধরতে পারে। মানবতাবাদের অর্থই হল তা-ই যা মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারে। এরূপ বিকাশের ফলে মানুষ আর নিজের ক্ষুদ্র চেতনায় আবদ্ধ থাকতে পারে না। এরই ফলে ক্ষুদ্র চেতনার গন্ডি পেরিয়ে আদর্শ মানুষ হিসেবে মানুষের জয়গান শোনা যায়। এ হল এমনই শ্রেষ্ঠতা যা ব্যক্তিমানুষকে তার ক্ষুদ্র সীমানার বাইরে নিয়ে গিয়ে পরমসত্তার চেতনার দ্বারে হাজির করে।
0 Comments