পোস্টগুলি

দর্শন লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

চারিপদ ঘটিত দোষ টীকা | চতুষ্পদী দোষ কখন ঘটে | HS Exam Philosophy Suggestion 2024

নমস্কার আমি দীপ আজকের এই পোস্টেআমরা জানব  চারিপদ ঘটিত দোষ নিয়ে ৷ চারিপদ ঘটিত দোষ টীকা।  অথবা, চারিপদ ঘটিত দোষ কখন হয়। উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো। চতুষ্পদী দোষ কি ? অথবা, চতুষ্পদী দোষ কখন ঘটে । উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো। সংক্ষিপ্ত টীকা : চারিপদ ঘটিত দোষ (Fallacy of four terms) ন্যায়ের প্রথম নিয়ম অনুযায়ী কোন ন্যায় অনুমানে তিনটি পদের পরিবর্তে চারটি পদ থাকলে যে দোষ দেখা দেয়, তাকে চারিপদ ঘটিত দোষ বা চতুষ্পদী দোষ বলা হয়। যেমন - উদাহরণ:- সোনা রুপার চেয়ে দামি, রূপ লোহার চেয়ে দামি, সুতরাং সোনা লোহার চেয়ে দামি। যুক্তিবিজ্ঞান সম্মত আকার বা / তর্ক বিজ্ঞানসম্মত আকার:-  প্রধান আশ্রয়বাক্য: সকল রুপা হয় লোহার চেয়ে দামি ধাতু - A অপ্রধান আশ্রয়বাক্য: সকল সোনা হয় রুপার চেয়ে দামি ধাতু - A সিদ্ধান্ত: সকল সোনা হয় লোহার চেয়ে দামি ধাতু - A       A A A -------- প্রথম সংস্থায় । দোষ:- চতুষ্পদী দোষ। বিচার /ব্যাখ্যা:- এই নিরেপেক্ষ ন্যায় অনুমানটি অবৈধ। এখানে যুক্তিটিতে চারিপদ ঘটিত দোষ ঘটেছে । ন্যায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তিনের বেশি বা কম থাকবে না ।

বাক্যকে বচনে রূপান্তরিত করার নিয়ম | HS Philosophy Suggestion 2024

ছবি
আমি দীপ আজকের এই পোস্টে আমরা class 12 এর philosophy  বাক্যকে বচনে রূপান্তরিত করার নিয়ম নিয়ে জানব ৷  বাক্যকে বচনে রূপান্তরিত করার নিয়ম বাক্যকে বচনে রূপান্তরিত করার নিয়ম বাক্যকে বচনে রূপান্তরিত করার নিয়ম  মনে রাখার বিষয় – A. বাক্যের অর্থ বচনে একই থাকবে । B. বাক্যের অর্থ একই রেখে সংক্ষেপে বচন করতে হবে। C. বচনে উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয়-র স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে । D. বাক্যের নঞর্থক চিহ্নটি বচনের সংযোজকের সঙ্গে যুক্ত হবে । E. বচনে সংযোজক টি সর্বদা” হওয়া” ক্রিয়ার বর্তমানকালের হবে । F. গুণ ও পরিমাণ অনুসারে বচনের সাংকেতিক নাম বসাতে হবে ।                                      1) বাক্যকে বচনে পরিণত করার প্রথম নিয়ম – সকল,সমুদয়, সদা, যে-সে, অবশ্যই, সমস্ত, সব, সবাই, সর্বত্র, সর্বদা, প্রত্যেক, প্রত্যেকেই, নিশ্চিতভাবে, অনিবার্যভাবে, আবশ্যিকভাবে, যে কেউ, যে কেহ ,যে কোনো, যা-তা, যেখানে-সেখানে, যখন-তখন ,যদি-তবে, চিরকাল, মাত্র, মাত্রই ,সর্বতোভাবে ইত্যাদি এই জাতীয় কোন শব্দ সদর্থক বাক্যে থাকলে, সেক্ষেত্রে বাক্যটি সামান্য সদর্থক “ A ”বচন হবে। আর কোন নঞর্থক বাক্যে এই জাতীয় কোন শব্দ থাকলে বাক

সাপেক্ষ বচনের আকার

সাপেক্ষ বচনের আকার (Proposition Form of Conditional Propositions) সাপেক্ষ বচনের ক্ষেত্রে আমরা একটি শর্ত (Condition)-কে উল্লেখ করে থাকি। 'সাপেক্ষ বচন দু-প্রকারের- (i) প্রাকল্পিক বচন (Hypothetical Proposition) এবং (ii) বৈকল্পিক বচন (Disjunctive Proposition)। সাপেক্ষ বচন প্রাকল্পিক বচনের আকার: "যদি P তবে Q" উদাহরণ: যদি বৃষ্টিপাত হয় তবে মাটি ভিজবে। বৈকল্পিক বচনের আকার: "হয় P অথবা Q" উদাহরণ: হয় তুমি পাহাড়ে যাবে অথবা তুমি সমুদ্রে যাবে। 1) প্রাকল্পিক বচন ও তার আকার: প্রাকল্পিক বচন হল সেই বচন, যা "যদি... তবে..." নামক শব্দগুচ্ছ দ্বারা গঠিত। যেমন- "যদি বৃষ্টি পড়ে তবে মাটি ভিজবে।" প্রাকল্পিক বচনের অংশ হল দুটি পূর্বগ (Antecedent) এবং অনুগ (Consequent)। যে ঘটনাটি আগে ঘটে, তাকে বলে পূর্বগ এবং যে ঘটনাটি পরে ঘটে তাকে বলে অনুগ। অনুগ সর্বদা পূর্বগকে অনুসরণ করে চলে। ওপরের উদাহরণটির ক্ষেত্রে বৃষ্টি পড়া হল পূর্বগ, আর মাটি ভেজা হল অনুগ। প্রাকল্পিক বচনের আকারটিকে যেভাবে উল্লেখ করা যায়, তা হল- যদি P তবে Q. # যদি P নয় তবে Q নয় ইত্যাদি। 2) বৈকল্পিক বচন ও তার আকার: বৈক

নিরপেক্ষ বচনের আকার

নিরপেক্ষ বচনের আকার (Propositional Form of Categorical Proposition) নিরপেক্ষ বচন চার প্রকারের- সদর্থক, সামান্য-নঞর্থক, সদর্থক, বিশেষ- বিশেষ-নঞর্থক। এই চার প্রকারের নিরপেক্ষ বচনের আকারগুলিকে নীচে উল্লেখ করা হল- 1) সামান্য-সদর্থক বা A বচনের আকার: সকল S হয় P (A); অর্থাৎ, এর রূপ হল [সকল. হয়........।] এর মূর্তরূপ হল- সকল কবি হয় দার্শনিক (A)। 2) সামান্য-নঞর্থক বা E বচনের আকার: কোনো S নয় P (E); অর্থাৎ, এর রূপ হল [কোনো......... নয়.........।] এর মূর্তরূপ হল- কোনো মানুষ নয় সুখী (E)। নিরপেক্ষ বচন সামান্য বা সার্বিক-সদর্থক = A বচন এর আকার: সকল Sহয় P উদাহরণ: সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)।

পদের ব্যাপ্যতা

পদের ব্যাপ্যতা (Distribution of Terms) তর্কবিজ্ঞানে ব্যাপ্যতা বলতে পদের ব্যাপ্যতাকেই বোঝায়। যে-কোনো নিরপেক্ষ বচনে দুটি পদ থাকে, যার একটি হল উদ্দেশ্য পদ এবং অপরটি হল বিধেয় পদ। নিরপেক্ষ বচনের পদগুলি ব্যাপ্য (Distributed) হতে পারে, আবার অব্যাপ্য (Undistributed)-ও হতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে যে ব্যাপ্যতা কী? ব্যাপ্যতার সংজ্ঞা (Definition of Distribution) প্রত্যেকটি পদের দুটি দিক আছে-পরিমানের দিক এবং গুণের দিক। পদের পরিমানকে বলা হয় তার ব্যাস্তুর্থ এবং তার গুণকে বলা হয় তার জাত্যর্থ। কোনো পদের মাধ্যমে যদি তার সম্পূর্ণ ব্যস্তর্থ (Denotation)-কে উল্লেখ বা নির্দেশ করা হয়, তখন বলা হয় যে পদটি ব্যাপ্য (Distributed)। অর্থাৎ, কোনো একটি পদের ব্যাপ্যতার মাধ্যমে-সেই পদ দ্বারা নির্দেশিত বিষয়টির সম্পূর্ণ পরিমাণকে উল্লেখ করা হয়েছে কি না, তা বোঝা যায়। যদি দেখা যায় যে, বিষয়টির সম্পূর্ণ পরিমাণকে নির্দেশ করা হয়েছে, তবেই বলা হবে যে, পদটি ব্যাপ্য হয়েছে। অন্যদিকে, কোনো পদের মাধ্যমে যদি তার পরিপূর্ণ ব্যস্তর্থকে নির্দেশ না করা হয়, তবে বলা হয় পদটি অব্যাপ্য (Undistributed)। অর্থাৎ, পদের অব্যাপ্যতার অর্থ হল সে

বচনের আকার

বচনের আকার (Proposition Form) যুক্তির মূলভিত্তিই হল বচন (Proposition), কারণ বচন ছাড়া কোনো যুক্তিই গঠিত হতে পারে না। সুতরাং যুক্তিবিজ্ঞানে বচনের যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে, তা কোনোমতেই অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু যুক্তিবিভাজনে বচনের থেকেও আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় বচনের আকার (Proposition Form)-কে। বচনের আকার বলতে বোঝায় বচনের একটি নির্দিষ্ট কাঠামোকে। এরূপ কাঠামোয় উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদগুলোকে পরিবর্তন করলেও তার কাঠামো বা আকারটি একই থাকে। অর্থাৎ বচনের আকারের একটি নির্দিষ্টতা ও সার্বিকতা আছে-যার ফলে তার সত্যমূল নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কোনো ভ্রান্তি ঘটে না। তর্কবিজ্ঞানে আমরা বিভিন্ন রকম বচন পেয়ে থাকি। আবার বিভিন্ন রকম বচনের বিভিন্ন আকারও পেয়ে থাকি।

ব্যাপ্যতার স্মৃতি সহায়ক শব্দ

ব্যাপ্যতার স্মৃতি সহায়ক শব্দ (Memorial Word of Distributions) নিরপেক্ষ বচনের কোনো পদ কাকে ব্যাপ্য করে, তা মনে রাখার সুবিধার জন্য একটি অর্থহীন সাংকেতিক শব্দকে মনে রাখতে হয়। এটি হল- As Eb In Op (আসেবিনপ] এই শব্দটির অন্তর্গত যে চারটি Capital Letter আছে, সেগুলি চারটি নিরপেক্ষ বচন, অর্থাৎ-A, E, 1, 0-কে চিহ্নিত করে। আর এর অন্তর্গত যে চারটি Small Letter আছে, তা নিরপেক্ষ বচনগুলির ব্যাপ্যতাকে চিহ্নিত করে। যেমন- S = Subject (উদ্দেশ্য) b = both Subject and Predicate (উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয়ই) n = none of Subject or Predicate (উদ্দেশ্য ও বিধেয়- কোনোটিই নয়) p = Predicate (বিধেয়) সুতরাং, এই সংকেতমূলক শব্দটিকে বিশ্লেষণ করলে ব্যাপ্যতার সূত্রগুলিকে পাওয়া যায়।  As Eb In Op =  A(s) Subject  E(b) both I(n) none O(p) predicate subject predicate অর্থাৎ, subject and predicate As = A-বচন শুধুমাত্র উদ্দেশ্যকেই ব্যাপ্য করে। Eb = E-বচন উদ্দেশ্য ও বিধেয় উভয়কেই ব্যাপ্য করে। In = I-বচন কোনোটিকেই ব্যাপ্য করে না। Op = O-বচন শুধুমাত্র বিধেয়কে ব্যাপ্য করে।

যুক্তিবিদ্যা বা তর্কবিদ্যার অর্থ, সংজ্ঞা, বিষয়, বিজ্ঞান, গুরুত্ব

যুক্তিবিদ্যা বা তর্কবিদ্যার প্রাথমিক ধারণা (Basic Concept of Logic) যুক্তিবিদ্যা বা তর্কবিদ্যা হল একটি অত্যন্ত প্রাচীন শাস্ত্র। এটি দর্শনের একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শাখা। অনেকে প্রখ্যাত গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলকেই এই শাস্ত্রের জনকরূপে উল্লেখ করেন। স্বতন্ত্রভাবে প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিকেরাও অনুরূপ একটি শাস্ত্র গড়ে তোলেন। তাঁরা এই শাস্ত্রটিকে ন্যায়শাস্ত্র, যুক্তিশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র ইত্যাদি বিভিন্ন নামে অভিহিত করেছেন। আধুনিককালে আমরা যুক্তিবিদ্যা, তর্কবিদ্যা, যুক্তিবিজ্ঞান, তর্কবিজ্ঞান প্রভৃতি শব্দগুলিকেই ব্যবহার করে থাকি। তবে, এ কথা সত্যি যে ভারতবর্ষে যেমন প্রাচীন ন্যায় সম্প্রদায়ের দার্শনিকরা এই শাস্ত্রের চর্চা করেছেন, তেমনি সুপ্রাচীন গ্রিসেও অ্যারিস্টটলের সময়কালেই এই শাস্ত্রটির সূত্রপাত ঘটে। সুতরাং, এই শাস্ত্রটি যে অত্যন্ত প্রাচীন- তাতে কোনো সন্দেহই থাকতে পারে না। তর্কবিদ্যার আলোচনায় ওঠা প্রাথমিক প্রশ্ন (Elementary Questions Raised in the Discussion of Logic) তর্কবিদ্যা বা যুক্তিবিদ্যা পাঠের প্রথমেই আমাদের মনে যে প্রশ্নটি স্বাভাবিকভাবেই জেগে ওঠে, তা হল-তর্কবিদ্যা বা যুক্তিবিদ্যা কী। অথব

যুক্তির বৈশিষ্ট্য

যুক্তির বৈশিষ্ট্য (Features of Argument) ভাষায় প্রকাশিত যে-কোনো অনুমানকেই যুক্তি বলা যায় না। যুক্তির কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলির সাহায্যেই যুক্তিকে চিনে নেওয়া যায়। এগুলিকে নীচে উল্লেখ করা হল-  1) একাধিক বচন বা বাক্য দ্বারা গঠিত: যুক্তি অবশ্যই একাধিক বচন বা বাক্য দ্বারা গঠিত হয়। অর্থাৎ, যুক্তি কখনোই একটি মাত্র বচন দ্বারা গঠিত হতে পারে না। একাধিক বচনের সম্মিলিত রূপেই যুক্তিকে গঠন করা যায়। 2) দুটি অংশ সমন্বিত: যুক্তির দুটি অংশ-হেতুবাক্য বা যুক্তিবাক্য এবং সিদ্ধান্ত। যে বাক্য বা বচনগুলির সাহায্যে আমরা একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হই, সেই বচন বা বচনগুলিকেই বলা হয় হেতুবাক্য (Premises)। আর এই সমস্ত হেতুবাক্যের সাহায্যে যে বাক্য বা বচনটি প্রতিষ্ঠিত হয়, তাকেই বলা হয় সিদ্ধান্ত (Conclusion)। হেতুবাক্য এবং সিদ্ধান্তকে বলা হয় যুক্তির অবয়ব বা অংশ। 3) হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের অন্তঃস্থিত সম্বন্ধস্বরূপ: যুক্তি বা তর্ক হল হেতুবাক্য এবং সিদ্ধান্তের অন্তঃস্থিত এক সম্বন্ধস্বরূপ। হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই-এমন বচন দ্বারা কোনো যুক্তিই গঠন করা যায় না। অর্থাৎ, পা

যুক্তির স্বরূপ বা প্রকৃতি

যুক্তির স্বরূপ বা প্রকৃতি (Nature of Argument) 1) জ্ঞানলাভের একটি প্রক্রিয়ারূপে যুক্তি বা অনুমান:  যুক্তি অথবা অনুমান হল জ্ঞানলাভের একটি প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া হল একটি যথার্থ বা সঠিক প্রক্রিয়া। এধরনের প্রক্রিয়া বাঁধাধরা নিয়মের অনুশাসন মেনে চলতে চায়। কোনো কারণে যদি নিয়ম মেনে চলা না হয়, তাহলে এই প্রক্রিয়া কখনোই সুফল দেয় না। তাই ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে যদি কোনো যুক্তি অথবা অনুমান গঠন করা হয়, তাহলে তা থেকে যথার্থ জ্ঞান পাওয়া যায়। কিন্তু নিয়মগুলিকে যথাযথভাবে না মানলে যুক্তি অথবা অনুমানের ক্ষেত্রে ভ্রান্তি দেখা দেয়। সেকারণেই যুক্তি অথবা অনুমানের নিয়মগুলি সম্পর্কে আমাদের যথাযথ ও সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা দরকার। তর্কবিদ্যা আমাদের সেই নিয়মগুলি সঠিকভাবে জানতে সাহায্য করে। সুতরাং তর্কবিদ্যার কাজ হল, সেই সমস্ত নিয়মের সন্ধান দেওয়া, যেগুলিকে অনুসরণ করলে যুক্তি বা অনুমান যথার্থ হয়। 2) যুক্তি বা তর্কের বিষয় কোনো মানসিক প্রক্রিয়া নয়:  তর্কবিদ্যায় আমরা কোনো মানসিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করি না। কারণ, মানসিক প্রক্রিয়া হল নেহাত-ই কোনো মানুষের ব্যক্তিগত বিষয় এবং তা অপরের কাছে অপ্রকাশিত। সুতরাং শুধুমাত্র কোনো মানসিক প্

যুক্তির আকার

যুক্তির আকার (Argument Form) প্রত্যেকটি যুক্তির দুটি রূপ লক্ষ করা যায়। যুক্তির এই দুটি রূপের একটি হল তার আকারগত দিক এবং অপরটি হল তার উপাদানগত দিক। যুক্তির উপাদান হল বচন (Proposition)। একাধিক বচনের সহযোগে কোনো একটি যুক্তি Argument) গঠিত হয়। যে-কোনো যুক্তির অন্তর্গত ওই সমস্ত বচনগুলিই হল যুক্তির উপাদান। আবার যুক্তির উপাদান বলতে যুক্তির বিষয়বস্তুকেও বোঝানো হয়ে থাকে। এই উপাদান দিয়ে গঠিত হয় যুক্তি। এই যুক্তিকে যখন একটি বিশেষ আকারে উপস্থিত করা হয়, তখন তাকে বলা হয় যুক্তির আকার (Argument Form)।  যুক্তির বিভিন্ন আকার (Different Argument Forms) যুক্তির আকার বলতে যে কাঠামোয় কোনো একটি যুক্তি গঠিত বা প্রকাশিত হয়, সেই কাঠামোকেই বোঝায়। অর্থাৎ, যে কৌশলে বা নিয়মে একাধিক বচন সংযুক্ত হয়ে একটি যুক্তি গঠন করে, সেই কৌশল বা নিয়মকেই বলা হয় যুক্তির আকার। কোনো একটি নির্দিষ্ট যুক্তির উপাদান পরিবর্তিত হলেও, তার আকার (Form) কিন্তু অপরিবর্তিত থাকে। একটি অবরোহ যুক্তি কেবলমাত্র সরল নিরপেক্ষ বচন নিয়ে গঠিত হতে পারে, আবার জটিল বচন সহযোগেও গঠিত হতে পারে। সরল অবরোহ যুক্তির আকার যদি একটি অবরোহ যুক্তিতে কেবলমাত্র সরল নিরপেক্

যুক্তির বিভাগ

যুক্তির বিভাগ (Classification of Arguments) তর্কবিদ্যায় যুক্তিকে দু-ভাগে ভাগ করা হয়েছে- অবরোহ যুক্তি (Deductive Argument) এবং আরোহ যুক্তি (Inductive Argument) | অবরোহ যুক্তি (Deductive Argument) যে যুক্তিতে এক বা একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, অর্থাৎ যুক্তিবাক্যগুলি সত্য হলে সিদ্ধান্তটি কখনোই মিথ্যা হতে পারে না এবং সিদ্ধান্তটি কখনোই যুক্তিবাক্য অপেক্ষা ব্যাপকতর নয়, সেই যুক্তিকেই বলা হয় অবরোহ যুক্তি (Deductive Argument)। অবরোহ যুক্তির সিদ্ধান্তগুলির বক্তব্য কখনোই যুক্তিবাক্যের বক্তব্যকে অতিক্রম করে যেতে পারে না।  অবরোহ যুক্তির বৈশিষ্ট্য অবরোহ যুক্তির মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল- (1) অবরোহ যুক্তির ক্ষেত্রে যুক্তিবাক্যের সংখ্যা এক বা একাধিক হতে পারে। (2) যুক্তিবাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। (3) সিদ্ধান্তে এমন কোনো বিষয় প্রমাণিত হতে পারে না, যা যুক্তিবাক্যের মধ্যে নিহিত নয়। (4) যুক্তিবাক্যের ব্যাপকতার চেয়ে সিদ্ধান্তের ব্যাপকতা কখনোই বেশি হবে না। অর্থাৎ, তা যুক্তিবাক্যের ব্যাপকতার হয় সমান হবে, নয়তো তার চেয়ে কম হবে। (5) অবরোহ যুক্তির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আ

যুক্তির বৈধতা ও যুক্তির অবৈধতা

যুক্তির বৈধতা (Validity of Arguments) আমরা জানি যে, অনুমানকে যখন ভাষায় ব্যক্ত করা হয়, তখন তাকে বলা হয় যুক্তি। এই যুক্তি ঠিক বা শুদ্ধ হতে পারে, আবার তা অশুদ্ধ বা ভুলও হতে পারে। তর্কবিদ্যায় নির্ভুল বা শুদ্ধ যুক্তিকে বলা হয় বৈধ যুক্তি (Valid Argument), আর ভুল বা অশুদ্ধ যুক্তিকে বলা হয় অবৈধ যুক্তি (Invalid Argument)। বৈধতা তথা বৈধ বা অবৈধ শব্দ দুটি তাই শুধুমাত্র অবরোহ যুক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যুক্তি বা যুক্তির আকার, যাই বলা হোক না কেন, এই দুটি বিষয়ের সঙ্গেই বৈধতার প্রশ্নটি জড়িত। তাই বৈধতাকে অবরোহ যুক্তির নিজস্ব ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যরূপে উল্লেখ করা হয়। একটি যুক্তি বৈধ হতে পারে, আবার অবৈধও হতে পারে। তাই সমস্ত যুক্তিই বৈধ-রূপে গণ্য হতে পারে না, আবার সমস্ত যুক্তিই অবৈধ-রূপেও গণ্য হতে পারে না। এজন্য কোনো কোনো যুক্তি বৈধরূপে গণ্য, আবার কোনো কোনো যুক্তি অবৈধরূপে স্বীকৃত। 1) যুক্তির আকারের সঙ্গে যুক্তির বৈধতার সম্পর্ক : আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, প্রত্যেকটি অবরোহ যুক্তির মধ্যে দুটি বিষয় দেখা যায়। আকার এবং উপাদান। একাধিক বচন সহযোগে একটি অবরোহ যুক্তি গঠিত হয়। এই বচনগুলি হল অবরোহ যুক্তির উপাদান এবং এগ

বুদ্ধিবাদের বিভিন্ন রূপ কী তা আলোচনা করো।

বুদ্ধিবাদের বিভিন্ন রূপ বুদ্ধিবাদ অনুসারে বুদ্ধি হল জ্ঞানের একমাত্র উৎস। বুদ্ধিকে যাঁরা জ্ঞানের উৎস হিসেবে স্বীকার করেন, তাঁদের বলা হয় বুদ্ধিবাদী দার্শনিক। বুদ্ধিবাদী দার্শনিকদের আবার দুটি রূপ দেখা যায়—[1] চরমপন্থী এবং [2] নরমপন্থী। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদের ধারণা:  চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ অনুসারে বুদ্ধি বা প্রজ্ঞাই হল জ্ঞানের একমাত্র উৎস। অর্থাৎ, বুদ্ধি বা প্রজ্ঞা ছাড়া জ্ঞানের দ্বিতীয় আর কোনো উৎস নেই। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বুদ্ধি বা প্রজ্ঞা ছাড়া জ্ঞানের অপরাপর উৎসগুলিকে অস্বীকার করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চরম বুদ্ধিবাদী দার্শনিকগণ ইন্দ্রিয় সংবেদন তথা অভিজ্ঞতার বিষয়টিকে জ্ঞানের উৎস হিসেবে অস্বীকার করেছেন। তাঁরা জ্ঞানের উৎপত্তির ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়ানুভবের কোনো মূল্যই স্বীকার করেন না। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদীদের অন্যতম হলেন প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক পারমিনাইডিস, সক্রেটিস, প্লেটো, জার্মান দার্শনিক ভলফ এবং ফরাসি দার্শনিক রেঁনে দেকার্ত প্রমুখ। তাঁরা সকলেই দাবি করেন যে, আমাদের অভিজ্ঞতার জগৎ নিয়ত পরিবর্তনশীল। অভিজ্ঞতার মাধ্যমে নিয়ত ও শাশ্বত সত্যের জ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়। নিত্য ও শাশ্বত সত্যের জ্ঞান লাভ করতে হলে কেবল বু

চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ বলতে কী বোঝ? মতবাদটির মূল্যায়ন করো।

চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ জ্ঞানের উৎস সম্পর্কিত মতবাদগুলির মধ্যে বুদ্ধিবাদ হল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ। এরূপ মতবাদ অনুসারে বুদ্ধি বা প্রজ্ঞাই হল জ্ঞানলাভের মৌল উৎস। অবশ্য বুদ্ধি বা প্রজ্ঞাকেই জ্ঞানের উৎসরূপে স্বীকার করে নিলেও, সমস্ত বুদ্ধিবাদী দার্শনিক এ বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন না। এই মতভেদের পরিপ্রেক্ষিতে বুদ্ধিবাদের দুটি রূপ লক্ষ করা যায়-চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ এবং নরমপন্থী বুদ্ধিবাদ। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদের মূল বক্তব্য:  চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ অনুসারে বুদ্ধি বা প্রজ্ঞাই হল জ্ঞানের একমাত্র উৎস। অর্থাৎ, এরূপ মতবাদে বুদ্ধি ছাড়া আর দ্বিতীয় কোনো জ্ঞানের উৎসকে স্বীকার করা হয় না। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদ অনুসারে ইন্দ্রিয় সংবেদনলব্ধ জ্ঞান তথা অভিজ্ঞতামূলক জ্ঞানকে একেবারেই স্বীকার করা হয়নি। চরমপন্থী বুদ্ধিবাদীদের মতে, ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতার জগৎ নিয়ত পরিবর্তনশীল। যে জগৎ নিয়ত পরিবর্তনশীল, সেই জগৎ থেকে কোনো নিত্য ও শাশ্বত জ্ঞান পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং, অভিজ্ঞতা কখনোই জ্ঞানের উৎসরূপে গণ্য হতে পারে না। নিত্য, শাশ্বত ও যথার্থ জ্ঞানের উৎসরূপে শুধু বুদ্ধিই বিবেচ্য হতে পারে। চরম বুদ্ধিবাদী দার্শনিকদের অন্যতম হলেন পারমিনাইডি