• ব্যাবসাবাণিজ্যের সুবিধা: একে অপরের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক আদানপ্রদানের মাধ্যমে। ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন দ্রব্য আদানপ্রদান (বাণিজ্য) হয়ে থাকে। এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে এইসব দেশগুলি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলি আরও উন্নত বাণিজ্যিক স্বার্থে অতি সম্প্রতি 'SAPTA' (South Asian Preferential Trade Agreement) নামক একটি সংগঠন গড়ে তুলেছে।
• জলজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার: দেশগুলি সীমারেখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন হলেও নদীর প্রবাহকে সীমারেখা দিয়ে আটকানো যায় না। তাই নদী এক দেশ থেকে আর এক দেশে প্রবাহিত হয়। এই জলসম্পদ ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলি পরস্পর মিলে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করে থাকে। এর ফলেই তৈরি হয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক।
• শিল্পের উন্নতি: প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে কৃষিজ, খনিজ, বনজ সম্পদ আমদানি করে ভারত শিল্পে অভাবনীয় উন্নতি করে চলেছে, যেমন- পাকিস্তানে দীর্ঘ আঁশযুক্ত কার্পাস, বাংলাদেশের উন্নতমানের লম্বা আঁশযুক্ত পাট, মায়ানমারের খনিজ তেল ও সেগুন কাঠ, শ্রীলঙ্কার মূল্যবান পাথর প্রভৃতি।
• দেশরক্ষা: প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সর্বদা প্রীতির সম্পর্ক থাকলে বৈদেশিক আক্রমণের আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় কম হয়। তার ফলে অভ্যন্তরীণ উন্নতি অতি দ্রুতগতিতে হয় এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নতি: প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে একে অপরের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদান করতে পারে।
নাটক, উপন্যাস, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা, শিক্ষা সম্মেলন প্রভৃতির আয়োজন ও আদানপ্রদান হলে বিভিন্ন দেশের মানুষের রুচিবোধ, ধর্ম, সংস্কৃতি, বিশ্বাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়া যায়।
• যৌথ পরিকল্পনা: ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকায় বিভিন্ন যৌথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা সহজসাধ্য হচ্ছে, যেমন- (1) ভুটানের সঙ্গে চুখা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন, (II) বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তি, (iii) নেপালের সঙ্গে কোশী
নদী পরিকল্পনা রূপায়ণ প্রভৃতি।
• বিপর্যয়ে সহযোগিতা: প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেমন বন্যা, ভূমিকম্প, খরা প্রভৃতির ফলে কোনো দেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিবেশী দেশগুলি ছুটে যায় তাকে সাহায্য করতে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থ ও ত্রাণজনিত সাহায্যের মধ্য দিয়েও ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে
সুন্দর সম্পর্ক বিদ্যমান।
• সার্ক (SAARC) প্রতিষ্ঠা: 1985 সালে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান এই ৪ টি
দেশ নিয়ে SAARC নামক একটি সংস্থা গঠন করা হয়েছে, যার অন্যতম উদ্দেশ্য হল- পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতিসাধন করা; নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি নির্মূল করা - তথা সমস্ত প্রতিবেশী দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নতিতে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করা।