728×90 ads

ন্যায়দর্শন কয়টি শাখায় বিভক্ত? জ্ঞানের বিষয়বস্তুকে ন্যায়দর্শনে কী বলা হয়? ন্যায়দর্শনের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী?

ন্যায়দর্শনের শাখা

ন্যায়দর্শন দুটি শাখায় বিভক্তㅡ [1] প্রাচীন ন্যায় এবং [2] নব্য ন্যায়। মহর্ষি গৌতমের ন্যায়সূত্রকে অবলম্বন করে ন্যায়ের যে শাখা গড়ে উঠেছে, তাকেই বলা হয় প্রাচীন ন্যায়। অপরদিকে, গঙ্গেশ উপাধ্যায়ের 'তত্ত্বচিন্তামণি'-কে কেন্দ্র করে ন্যায়ের যে শাখা বিস্তার লাভ করেছে, তাকেই বলা হয় নব্য ন্যায়। 

জ্ঞানের বিষয়বস্তু

জ্ঞানের বিষয়বস্তুকে ন্যায়দর্শনে বলা হয় প্রমেয় পদার্থ। পদের দ্বারা যে অর্থ বোধিত হয়, তাকেই বলা হয় পদার্থ (পদস্য অর্থঃ পদার্থ)। ন্যায়দর্শনে ষোলোটি পদার্থের কথা বলা হয়েছে।

ন্যায়দর্শনের প্রধান বৈশিষ্ট্য

ন্যায়দর্শনের প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য হল-

[1] অন্যতম আস্তিক দর্শন: ন্যায়দর্শন হল ছয়টি আস্তিক সম্প্রদায়ভুক্ত দর্শনের অন্যতম একটি সম্প্রদায়।

[2] বেদের প্রামাণ্য স্বীকার: ন্যায়দর্শন বেদের প্রামাণ্যকে স্বীকার করে এবং ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে।

[3] বেদ স্বতন্ত্র দর্শন: ন্যায়দর্শন বেদানুগত হলেও, তা বেদ স্বতন্ত্ররূপে গণ্য। কারণ, ন্যায়দর্শনে স্বাধীন চিন্তাবৃত্তির সাহায্যে নিজস্ব যুক্তির মাধ্যমে স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়।

[4] অধ্যাত্মবাদী দর্শন: ন্যায়দর্শন হল মূলত অধ্যাত্মবাদী দর্শন। কারণ এখানে নিত্য আত্মা, ঈশ্বর এবং মোক্ষ প্রভৃতি বিষয়কে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

[5] বস্তুবাদী দর্শন: অধ্যাত্মবাদী দর্শনরূপে গণ্য হলেও, ন্যায়দর্শন বস্তুবাদীরূপেও গণ্য। কারণ, এই দর্শনে জ্ঞানের বিষয়বস্তুর জ্ঞাননিরপেক্ষ সত্তাকে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

[6] জ্ঞানতত্ত্বের আলোচনায় গুরুত্বদান: ন্যায়দর্শনের মুখ্য আলোচ্য বিষয়বস্তুরূপে জ্ঞানতত্ত্বের ওপরই সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

[7] মোক্ষলাভের ওপর গুরুত্বদান: এই দর্শনে মোক্ষের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। মোক্ষের হেতুরূপে তত্ত্বজ্ঞানের বিষয়টিও এখানে অত্যন্ত গুরুত্ব লাভ করেছে। এ কারণেই ন্যায়শাস্ত্রকে মোক্ষশাস্ত্র রূপেও উল্লেখ করা হয়। 

[৪] চারটি মূল বিষয়: ন্যায়দর্শনে যে-সমস্ত বিষয় আলোচিত হয়েছে, তাদের মধ্যে মূলত চারটি বিষয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এগুলি হল- [i] জ্ঞান সম্পর্কিত, [ii] জড়জগৎ সম্পর্কিত, [iii] জীবাত্মা ও ঈশ্বর সম্পর্কিত এবং [iv] মোক্ষ সম্পর্কিত।

[9] স্বীকৃত চারটি প্রমাণ: ন্যায়দর্শনে প্রমাণ হিসেবে চারটি প্রমাণকে স্বীকার করা হয়েছে। এগুলি হল-প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শব্দ।

Post a Comment

0 Comments