Ad Code

জল সম্পদ সংরক্ষণ

জল সম্পদ সংরক্ষণ (Conservation of Water Resources)


সংজ্ঞা: যে পদ্ধতিতে জলের অপচয় রোধ, নিয়ন্ত্রিত ও কাম্য ব্যবহার, পুনঃব্যবহারের মাধ্যমে যুক্তিসংগত ও সুপরিকল্পিতভাবে জলকে ব্যবহার করা যায়, তাকে জল সংরক্ষণ বলে। 

জল সম্পদ সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহ: 


নিম্নলিখিত বিভিন্ন পদ্ধতির সাহায্যে জল সম্পদ সংরক্ষণ করা যেতে পারে। দৈনন্দিন জীবনে জলের চাহিদা হ্রাস: দৈনন্দিন জীবনে মানুষের বিভিন্ন কার্যাবলির জন্য প্রয়োজনীয় জলের চাহিদা কমানো প্রয়োজন। বাঁধ ও জলাধার গঠন: নদীতে বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ করে জল সঞ্চয় করা যেতে পারে এবং ওই জলকে বহুমুখী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে জল সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।

• জলসেচের কাম্য ব্যবহার: নিয়ন্ত্রিত উপায়ে বিশেষত বিন্দু ও ফোয়ারা পদ্ধতির সাহায্যে জলসেচ করলে প্রায় 32% জলের অতিব্যবহার রোধ করা সম্ভব হয়। জলনিকাশি ব্যবস্থার উন্নতিবিধান: নর্দমার জল যাতে কোনোভাবে জলাশয়ের জলকে দূষিত করতে না পারে, তার জন্য নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন। লবণমুক্তকরণ: সাম্প্রতিককালে পৃথিবীতে সমুদ্রের লবণমুক্ত জলের সামগ্রিক পরিমাণ দৈনিক গড়ে প্রায় 4.5 কোটি গ্যালন। প্রধানত রিভার্স ওসমোসিস্ ও মাইক্রোফিলট্রেশন পদ্ধতি সমুদ্রের জলকে লবণমুক্ত করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজন পূরণ করা হয়। দূষিত জলের পরিশোধন: দূষিত জলকে পরিশোধন কেন্দ্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিশোধনের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। • ভৌমজলের কাম্য ব্যবহার: ভূপৃষ্ঠস্থ জলের তুলনায় ভৌমজলের পরিমাণ বেশি থাকায় ভৌমজলের কাম্য ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে হয়। ভৌমজলের নতুন উৎসের অনুসন্ধান: ভৌমজলের নতুন নতুন উৎসস্থল খুঁজে বের করে সেখানকার জলকে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে হবে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ: বৃষ্টির জল সংরক্ষণ হল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে বৃষ্টির জলকে সরাসরি ভূপৃষ্ঠস্থ জলাভূমিতে বা বাড়ির ছাদে সংগ্রহ করে গৃহস্থালি, কৃষি ও শিল্পের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার এবং জল সঞ্চয় ও সংরক্ষণ করা হয়। এর পরবর্তী পর্যায়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বৃষ্টির জলকে পরিশোধন করে গৃহস্থালি, পানীয় ও শিল্পের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় এবং কৃত্রিম উপায়ে ভূ-অভ্যন্তরে এই জলকে স্থানান্তরিত করে ভূপৃষ্ঠে জলের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হয়। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জলের চাহিদা মেটানোর জন্য অত্যন্ত সহজ ও সুলভ পদ্ধতি হল বৃষ্টির জল সংরক্ষণ। বন্যাপ্রবণ নদীর সঙ্গে সংযোগস্থাপন: বন্যাপ্রবণ নদীর সঙ্গে খালের মাধ্যমে বা বড়ো জলাধার তৈরি করে তার সঙ্গে। শুষ্ক নদীগুলিকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে বন্যার অতিরিক্ত জলকে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। জলাশয় ও জলাভূমির সংস্কারসাধন: মজে যাওয়া জলাশয় ও জলাভূমিগুলির সংস্কারসাধন করা হলে বৃষ্টির অতিরিক্ত জল সঞ্চয় ও সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।