728×90 ads

ভার্সাই সন্ধির পরবর্তীকালে বিশ্বে উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।

ভার্সাই সন্ধি ও উগ্র জাতীয়তাবাদ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে জার্মানিতে উগ্র জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয়ে ওঠে যার নেপথ্যে কাজ করেছিল ভার্সাই সন্ধি। জার্মানির মিত্র ইটালি এবং জাপানেও এই ভাবধারা ছড়িয়ে পড়ে।
ভার্সাই সন্ধির পরবর্তীকালে বিশ্বে উগ্র জাতীয়তাবাদের প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।

[1] জার্মানিতে উগ্র জাতীয়তাবাদ: ভার্সাই সন্ধির অবিচারের বিরুদ্ধে

জার্মানিতে উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারা ছড়িয়ে পড়ে এবং হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসিবাদ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। জার্মান জাতির শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাসী হিটলার বিশ্বব্যাপী এই জাতির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন। নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনে (১৯৩৩ খ্রি.) ভার্সাই সন্ধির অন্যায়গুলি দূর করার প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি জাতিসংঘের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। এরপর তিনিㅡ[i] জার্মানির অস্ত্রসজ্জা বৃদ্ধি করেন, [ii] রাইন ভূখণ্ড, অস্ট্রিয়া (১৯৩৮ খ্রি.), চেকোস্লোভাকিয়া (১৯৩৯ খ্রি.) দখল করেন এবং [iii] পোল্যান্ড আক্রমণ (১৯৩৯ খ্রি.) করেন।

[2] ইটালিতে উগ্র জাতীয়তাবাদ: উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রচারের মাধ্যমে মুসোলিনির নেতৃত্বে ইটালিতে ফ্যাসিবাদ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। মুসোলিনি স্পষ্ট ঘোষণা করেন যে, ভার্সাই সন্ধির দ্বারা ইটালির ওপর যে অন্যায় করা হয়েছে তা ইটালি সহ্য করবে না। ইটালির শাসনক্ষতা লাভ করে সাম্রাজ্যবাদী মুসোলিনিー[i] জাতিসংঘের বিরোধিতায় মেতে ওঠেন, [ii] গ্রিসের করফু দ্বীপে অভিযান চালিয়ে প্রচুর ক্ষতিপূরণ আদায় করেন এবং [iii] আফ্রিকার অ্যাবিসিনিয়া (ইথিওপিয়া) দখল (১৯৩৫ খ্রি.) করে নেন। তিনি আফ্রিকার ইরিত্রিয়া, সোমালিল্যান্ড ও অ্যাবিসিনিয়া নিয়ে 'ইতালীয় পূর্ব আফ্রিকা' নামে নতুন রাষ্ট্র গঠন করেন। 

[3] জাপানে উগ্র জাতীয়তাবাদ: উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাবধারা প্রচারের মাধ্যমে জাপানে জঙ্গি সমরবাদ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। [i] জাপান ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে চিনের মাঞ্চুরিয়া দখল করে নেয়। [ii] জাতিসংঘ এর প্রতিবাদ করলে জাপান জাতিসংঘের সদস্যপদ ত্যাগ (১৯৩৩ খ্রি.) করে। [iii] জাপান ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় চিনের বেশ কিছু স্থান দখল করে নেয়।

মূল্যায়ন: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে উগ্র জাতীয়তাবাদী ইটালি, জার্মানি ও জাপান পরস্পরের মিত্র হয়ে ওঠে। [1] ইটালি ও জার্মানির মধ্যে 'রোম-বার্লিন অক্ষচুক্তি' (১৯৩৬ খ্রি.) এবং [2] জার্মানি ও জাপানের মধ্যে 'কমিন্টার্ন-বিরোধী চুক্তি' (১৯৩৬ খ্রি.) স্বাক্ষরিত হয়। [3] ইটালি ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে 'কমিন্টার্ন- বিরোধী চুক্তি'-তে যোগ দিলে এই তিনটি দেশকে নিয়ে 'রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষচুক্তি' (১৯৩৭ খ্রি.) গড়ে ওঠে। 
Read More 

Post a Comment

0 Comments