728×90 ads

কার্যকারণ সম্বন্ধের ধারণাটি কী?

কার্যকারণ সম্বন্দ্বের ধারণা


প্রাথমিক ধারণা: 

আমাদের এই অভিজ্ঞতালব্ধ জগৎ হল বৈচিত্র্যপূর্ণ ঘটনার জগৎ। এই জগতে ঘটনাগুলি আদৌ স্বতন্ত্র ও বিক্ষিপ্তরূপে থাকতে পারে না। কারণ, ঘটনাগুলি এমনই এক পারস্পরিক সম্পর্কে আবদ্ধ থাকে যে, একটি ঘটনা ঘটলে তার অনুসারীরূপে আরও একটি ঘটনা ঘটে। এই সমস্ত ঘটনার প্রথমটিকে বলা হয় কারণ এবং পরের বা অনুগামী ঘটনাটিকে বলা হয় কার্য। আর এদের অন্তঃস্থিত যে পারস্পরিক সম্বন্ধ, তাকেই বলা হয় কার্যকারণ সম্বন্ধ। উদাহরণস্বরূপ, জলপান করলে তৃয়া দূর হয়। এক্ষেত্রে জলপান হল কারণ আর তৃয়া নিবারণ হল কার্য। সাধারণ মানুষ, বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তি এবং দার্শনিক-সকলেই এই কার্যকারণ সম্পর্কে বিশ্বাসী।

কার্যকারণ সম্বন্ধে ঐকমত্যের অভাব: 

কার্যকারণ সম্বন্ধের প্রকৃতি নিয়ে সবাই একমত পোষণ করেন না। কারও মতে, কার্য ও কারণের মধ্যে একপ্রকার অনিবার্য সম্বন্ধ আছে; কারও মতে, তাদের মধ্যে কোনো অনিবার্য সম্পর্ক নেই। অনেকেই কার্য ও কারণের সম্পর্ককে এক স্বাভাবিক সম্পর্করূপেই পর্যবেক্ষণ করেন। আবার অনেকে উল্লেখ করেন যে, কার্য ও কারণের সম্বন্ধের বিষয়টি একটি মানসিক অভ্যাস মাত্র। এর পরিপ্রেক্ষিতেই কার্য ও কারণের সম্পর্ককে ঘিরে বিভিন্নপ্রকার তত্ত্ব বা মতবাদ উপস্থাপিত হয়েছে। এই মতবাদগুলির মধ্যে অন্যতম হল—[1] কার্যকারণ সম্পর্কিত সাধারণ মতবাদ, [2] কার্যকারণ সম্পর্কিত বুদ্ধিবাদীদের প্রসক্তি তত্ত্ব এবং [3] কার্যকারণ সম্পর্কিত অভিজ্ঞতাবাদী হিউমের সতত সংযোগ তত্ত্ব ইত্যাদি।

বিভিন্ন মতের পর্যালোচনা ও ব্যাখ্যা: 

প্রত্যেকটি ঘটনারই কারণ আছে- এরূপ এক স্বাভাবিক ও সাধারণ বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই আমরা আমাদের দৈনন্দিন কর্মপন্থা স্থির করি। এরূপ বিশ্বাসই আমাদেরকে ভবিষ্যতের দিকে চালিত করে। তবে এরূপ বিশ্বাসটাই আমাদের কাছে যথেষ্ট নয়। কারণ, শুধু এরূপ বিশ্বাসের দ্বারাই কার্যকারণ সম্পর্কের বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা যায় না। কার্যকারণ সম্পর্কের বিষয়টিকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যার জন্য কার্যকারণ সম্পর্কের স্বরূপ সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞান হওয়া প্রয়োজন। আর বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জ্ঞাত হওয়ার জন্যই প্রয়োজন কার্যকারণ সম্পর্কিত বিভিন্ন মতবাদকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা।

Post a Comment

0 Comments