প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সে প্রত্যক্ষ করগুলি ছিল-টাইলে, ভিংটিয়েমে, ক্যাপিটেশন, করভি বা বেগার শ্রম, প্রভৃতি। পরোক্ষ করগুলি ছিল-টাইদ বা ধর্ম কর, গ্যাবেল বা লবণ কর, তামাক কর, এইডি, ট্রেইট, স্ট্যাম্প কর, পণ্য শুল্ক, আবগারি শুল্ক, পরিবহণ শুল্ক (অকটুই) প্রভৃতি।
প্রাক্-বিপ্লব ফ্রান্সে ভ্রান্ত অর্থনীতির ফলে ফরাসি রাজকোশে তীব্র সংকট
[1] বৈদেশিক যুদ্ধ: ফ্রান্সের বুরবোঁ বংশের রাজাদের একের পর এক বৈদেশিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। চতুর্দশ লুই একের পর এক যুদ্ধে জড়িয়ে আগেই অর্থসংকট সৃষ্টি করে যান। এরপর পঞ্চদশ ও ষোড়শ লুইও বৈদেশিক যুদ্ধে জড়িয়ে রাজকোশের প্রভৃত অর্থ ব্যয় করে ফেলেন।
[2] ঋণ গ্রহণ: ব্যয় সংকোচের চেষ্টা না করে বুরবোঁ রাজারা বাজার থেকে ঋণ নিয়ে অর্থসংকট দূর করার উদ্যোগ নেন। এই ঋণের সুদ হিসেবে প্রতি বছর প্রচুর অর্থ চলে যেতে থাকে। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে বার্ষিক ব্যয়ের
প্রায় অর্ধাংশই চলে যায় সুদ বাবদ।
[3] রাজপরিবারের অমিতব্যয়িতা: রাজপরিবারের সীমাহীন বিলাসিতা,অমিতব্যয়িতা, ভার্সাই রাজপ্রাসাদের বিপুল সংখ্যক কর্মচারী ও রানিদের অসংখ্য ব্যক্তিগত চাকরের ব্যয় বহন প্রভৃতির ফলে অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে ফরাসি রাজকোশ প্রায় শূন্য হয়ে পড়ে।
[4] বৈষম্যমূলক করব্যবস্থা: ফরাসি সমাজব্যবস্থার প্রথম দুটি শ্রেণি-যাজক ও অভিজাতরা সমাজ ও রাষ্ট্রের নানা সুযোগসুবিধা ভোগ করত। তাদের হাতেই ছিল দেশের সম্পদের সিংহভাগ। অথচ তারা রাষ্ট্রকে কোনোরূপ কর দিত না। ফলে রাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ কর থেকে বঞ্চিত হয়।
[5] আর্থিক বিপর্যয়: দেশের আর্থিক সংকটের মধ্যেই ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মূদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রাজকর্মচারীদের আর্থিক দুর্নীতি প্রভৃতি ঘটনা অর্থসংকটকে আরও জটিল করে তোলে।